Rating

No Rating
0 Reviews
Views
34070

Jatiya Party (National Party-Ershad)


Address
রজনি গন্ধা
বাড়ি নং-৭৫ই, রোড নং-১৭এ
বনানী, ঢাকা-১২১৩
Established: 1986
Opening Hour
Saturday 9:00 AM-5:00 PM
Sunday 9:00 AM-5:00 PM
Monday 9:00 AM-5:00 PM
Tuesday 9:00 AM-5:00 PM
Wednesday 9:00 AM-5:00 PM
Thursday 9:00 AM-5:00 PM
Friday Closed

Google Map Location
Description

Jatiya Party (National Party-Ershad) is a political party in Bangladesh

১৯৮৬ সালের পয়লা জানুয়ারি জাতীয় ফ্রন্টের ধানমন্ডিস্থ কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এক জনাকীর্ণ সাংবাদিক সম্মেলনের মাধ্যমে জাতীয় পার্টি গঠনের ঘোষণা দেয়া হয়। জাতীয় ফ্রন্টের ৫টি শরিক দল একত্রিত হয়ে জাতীয় পার্টির আত্মপ্রকাশ ঘটে। নবগঠিত পার্টির প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান নিযুক্ত হন রাষ্ট্রপতি হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ এবং মহাসচিব নিযুক্ত হন অধ্যাপক এমএ মতিন। পার্টির কাউন্সিল না হওয়া পর্যন্ত-জাতীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য সচিব হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণ করেন আনোয়ার জাহিদ। সাংবাদিক সম্মেলনে ফ্রন্টের শরিক দল জনদল, ইউপিপি, গণতান্ত্রিক পার্টি, বিএনপি (শাহ) মুসলিম লীগ (সা) নিজেদের অস্থিত্ব বিলুপ্ত ঘোষণা করে জাতীয় পার্টিতে একীভূত হয়। ওই দিনটি ছিলো প্রকাশ্য রাজনীতি শুর“র প্রথম দিন।

১৯৮৫ সালের ১৬ই আগস্ট রাষ্ট্রপতি এরশাদের নীতি ও আদর্শ বাস্তবায়নের অঙ্গীকার নিয়ে জাতীয় ফ্রন্ট গঠিত হয়েছিলো। রাজনৈতিক দলের বাইরেও অনেক বরেণ্য ব্যক্তিত্ব ও রাজনৈতিক নেতা ফ্রন্টে যোগ দিয়েছিলেন। জাতীয় পার্টি গঠনের ঘোষণার দিনে তারাও জাতীয় পার্টিতে যোগদান করেন। পার্টি গঠনের ঘোষণায় বলা হয় দেশের সকল গণতন্ত্রকামী জাতীয়তাবাদী দেশপ্রেমিক শক্তিগুলোর বিভক্তির প্রবণতা কাটিয়ে একটি একক রাজনৈতিক দলে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার প্রয়োজনীয়তা থেকে জাতীয় পার্টি গঠন করা হয়েছে।

জাতীয় পার্টি গঠনের ঘোষণার দিনে প্রথমে ২১ সদস্যের প্রেসিডিয়াম, ৫৭ সদস্যের জাতীয় নির্বাহী কমিটিসহ ৬০১ সদস্যের জাতীয় নির্বাহী কমিটি গঠনের ঘোষণা দেয়া হয়।

প্রথম দিনে ২১ সদস্যের প্রেসিডিয়ামের মধ্যে ১৮ জনের নাম ঘোষণা করা হয়। এরা হলেন মিজানুর রহমান চৌধুরী, মওদদ আহমেদ, কাজী জাফর আহমেদ, সিরাজুল হোসেন খান, রিয়াজউদ্দিন আহমেদ ভোলা মিয়া, সালাউদ্দিন কাদের চৌধুরী, ব্যারিস্টার সুলতান আহমদ চৌধুরী, এম কোরবান আলী, শাহ মোয়াজ্জেম হোসেন, ব্যারিস্টার আনিসুল ইসলাম মাহমুদ, আনোয়ার হোসেন মঞ্জু, হুমায়ুন রশীদ চৌধুরী, একেএম মাঈদুল ইসলাম, এয়ার ভাইস মার্শাল (অব.) আমিনুল ইসলাম, ক্যাপ্টেন আবদুল হামিদ চৌধুরী, শামসুল হুদা চৌধুরী, এমএ সাত্তার ও বিচারপতি একেএম নুরুল ইসলাম। নবগঠিত কমিটিতে ৩ জন যুগ্ম মহাসচিব নিয়োগের ঘোষণা করা হয়। এরা ছিলেন, সফিকুল গণি স্বপন, মোস্তোফা জামাল হায়দার এবং লে. কর্নেল (অব.) জাফর ইমাম।

জাতীয় পার্টি ঘোষণার দিনে ৫৭ সদস্যের জাতীয় নির্বাহী কমিটির নামও ঘোষণা করা হয়। ৫৭ সদস্যের মধ্যে ছিলেন : প্রফেসর এমএ মতিন, আনোয়ার জাহিদ, শফিকুল গনি স্বপন, লে. কর্নেল (অব.) জাফর ইমাম, সুনীল গুপ্ত, মোস্তোফা জামাল হায়দার, মাইনুদ্দিন ভূঁইয়া, জিয়াউদ্দিন বাবলু, মেজবাহউদ্দিন বাবলু, শেখ শহীদুল ইসলাম, মিসেস মমতা ওহাব, প্রফেসর ইউসুফ আলী, শামসুল হক, কর্নেল (অব.) এম আনোয়ারউল­াহ, উপেন্দ্রলাল চাকমা, কামর“ন্নাহার জাফর, ব্যারিস্টার আবদুল হক, এসএ খালেক, জাহাঙ্গীর মোহাম্মদ আদেল, নাজিমুদ্দিন আল আজাদ, মাহবুবুল হক দোলন, মনির“ল হক চৌধুরী, তাজুল ইসলাম চৌধুরী, নূর মোহাম্মদ খান, এনামুল করীম শহীদ, অধ্যাপক আবদুস সালাম, ডা. মনসুর আলী, র“হুল আমিন হাওলাদার, পলাশ আনোয়ার মতি, অ্যাড ফয়েজ, সেকেন্দার মিয়া, শামসুজ্জামান মিন্টু, খুররম খান চৌধুরী, হাসিম উদ্দিন আহমেদ, এসবি জামান, আশরাফ আলী খান, মামদুদ চৌধুরী, নুর“ন্নবি চাঁদ, আবুল খায়ের চৌধুরী, রেদোয়ানুল হক চৌধুরী (ইদু), ইসমাইল হোসেন বেঙ্গল, কাজী মুজিবুর রহমান, ব্যারিস্টার জামাল হোসেন ভূঁইয়া, অ্যাডভোকেট রিয়াজুল হক চৌধুরী, আবদুর রহীম আজাদ, বুলবুল খান মাহবুব, হার“নুর রশীদ, খালেদুর রহমান টিটো, আসগর আলী, একরামুর রসুল, কেজি করিজন আলী, নূর রহমান খান শাজো, আদিলউদ্দিন হাওলাদার, সরদার সুলতান মাহমুদ, আবদুল আলী বুলবুল, অ্যাডভোকেট মোহাম্মদ মহসীন ও সাইফুদ্দিন আহমদ।

জাতীয় পার্টির গঠনের ঘোষণাকালে সামরিক শাসন থেকে সাংবিধানিক শাসনে উত্তরণের পরিবেশ অধিকতর উন্নত করার জন্য পার্টির ৫টি আশু কর্মসূচির কথা ঘোষণা করা হয়। সেগুলো ছিলো : (১) স্থগিত সংবিধানের সংশি­ষ্ট ধারাসমূহের ভিত্তিতে স্বল্পতম সময়ের মধ্যে নির্বাচনসমূহ অনুষ্ঠান (২) নির্বাচিত জাতীয় সংসদের প্রথম অধিবেশনে সামরিক আইনের অবসান এবং স্থগিত সংবিধান পরিপূর্ণরূপে পুনর“জ্জীবন (৩) অবাধ ও নিরপেক্ষ নির্বাচন অনুষ্ঠানের জন্য সম্ভাব্য সকল ব্যবস্থা গ্রহণ। নির্বাচনের পূর্বে সামরিক আইন সংকোচন ও সামরিক আদালত, সামরিক ট্রইব্যুনাল প্রত্যাহার (৪) নির্বাচনের আগে ক্রমান্বয়ে স্থগিত সংবিধানের মৌলিক অধিকার ও হাইকোর্টের রিট এখতিয়ার সংক্রান্ত— ধারাসমূহ পুনর্বহাল এবং (৫) রাজনৈতিক আটক সকল দেশপ্রেমিক বন্দির মুক্তি দান।

জাতীয় পার্টির প্রথম ঘোষণাপত্র এবং কর্মসূচিজাতীয় পার্টির প্রথম ঘোষণাপত্রে ৫টি মৌলিক আদর্শসহ ৯টি মূলনীতি ঘোষণা করা হয়। ৫টি মৌলিক আদর্শ হচ্ছে : (১) স্বধীনতা ও স্বার্বভৌমত্ব (২) ইসলামী আদর্শ প্রতিষ্ঠা ও অন্যান্য ধর্মাবলম্বীদের প্রতি শ্রদ্ধাবোধ (৩) বাংলাদেশী জাতীয়তাবাদ (৪) গণতন্ত্র ও (৫) সামাজিক প্রগতি তথা অর্থনৈতিক মুক্তি। ঘোষণাপত্রে এই ৫টি আদর্শের ব্যাখ্যাসহ ৯টি মূলনীতি ও ১২টি কর্মসূচির বিবরণ দেয়া হয়। এছাড়াও সামরিক শাসন থেকে সাংবিধানিক শাসনে উত্তরণের জন্য ৫টি আশু কর্মসূচির কথাও ঘোষণা করা হয়।

ঘোষণাপত্রে বলা হয় : স্বধীনতার পর একদলীয় শাসন, শিল্প-কলকারখানা ও আমদানি-রফতানি বাণিজ্যের উপর রাষ্ট্রীয় মালিকানা চাপিয়ে দেয়ায় গণতান্ত্রিক সমাজ বিকাশের পথ রূদ্ধ হয়। এই দুঃশাসন থেকে পরিত্রাণ লাভের জন্য যখন বাংলাদেশের মানুষ উপায় খুঁজছিলেন তখন ’৭৫ সালের আগস্ট ও সেপ্টেম্বরের রাজনৈতিক পটপরিবর্তন ঘটে। কিন্তু জনগণের আকাঙ্ক্ষা এখনো পরিপূর্ণভাবে বাস্তবায়ন হয়নি। হয়নি সুনির্দিষ্ট জাতীয় স্বতান্ত্র, স্বধীন অস্তিত্বের জন্য অপরিহার্য জাতীয়তাবাদ সকল বিভ্রান্তি ও অপব্যাখ্যা মুক্ত করে আপন মহিমায় প্রতিষ্ঠা করা।

বাংলাদেশ নামের এই ভূখন্ডে ভাষা, আঞ্চলিক বৈশিষ্ট্য, ধর্মীয় চেতনা ও অর্থনৈতিক আস্থার ভিত্তিতে জাতীয় মুক্তি ও জাতীয় স্বতন্ত্রবোধের যে উপলব্ধি ঐতিহাসিক প্রক্রিয়ায় গড়ে উঠেছে তার নাম বাংলাদেশী জাতীয়তাবাদ । আমাদের অসিত্বের উৎস এই বাংলাদেশী জাতীয়তাবাদ।

দেশের বিপুল সংখ্যাগরিষ্ঠ মুসলিম জনগণের ধর্মীয় আদর্শ ইসলামী আদর্শ সমাজ জীবনে প্রতিফলিত করার এবং তার ভিত্তিতে জাতীয় সংস্কৃতি বিকাশের সজোর প্রয়াস গৃহীত হয়নি। ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের স্ব স্ব ধর্মানুযায়ী আচার-অনুষ্ঠান পালনের ক্ষেত্রে রাষ্ট্রীয় আনুকূল্যে ও স্বীকৃতির প্রয়োজনীয় ব্যবস্থাও হয়নি।

ঘোষণাপত্রে উপজেলা ব্যবস্থাকে অভিনন্দিত করে বলা হয়, দেশের ইতিহাসে এই প্রথম নির্বাচিত জনপ্রতিনিধিদের হাতে নির্বাহী ক্ষমতা অর্পিত হয়েছে। রাষ্ট্রায়ত্ত খাতের পাশাপাশি বেসরকারিখাতে পুঁজি বিকাশ ও বিনিয়োগ উৎসাহিত করার বলিষ্ঠ সিদ্ধান্ত— নেয়া হয়।

প্রথম ঘোষণাপত্রে রাজনৈতিক স্থিতিশীলতার প্রতি হুমকিতে দুঃখ প্রকাশ করে বলা হয় যে, এটা সফল সৎপ্রয়াস ও জাতীয় আশা-আকাঙ্ক্ষা পূরণের পথে প্রধান প্রতিবন্ধক হয়ে দাঁড়াচ্ছে। অটুট জাতীয় ঐক্য ও জনগণের সক্রিয় অংশগ্রহণের মাধ্যমে নির্বাচিত গণতান্ত্রিক সরকার এ পরিস্থিতির মোকাবেলা করতে পারে। কিন্তু গত আড়াই বছরে জাতীয়তাবাদী দেশপ্রেমিক শক্তির অনৈক্য গণতন্ত্রবিরোধী শক্তিসমূহকে রাজনৈতিক পুনর্বাসনের সুযোগ দিয়েছে। ঘোষণাপত্রে বলা হয় এই অবস্থা চলতে দেয়া যায় না।

মূলনীতি :
পার্টির নয়টি মূলনীতির মধ্যে রয়েছে সকল মৌলিক রাষ্ট্রীয় প্রশ্নে জাতীয় ঐকমত্য ও বাংলাদেশী জাতির ঐক্য অর্জন, স্বধীনতা ও স্বর্বভৌমত্ব নিরঙ্কুশ করা, সকল প্রকার আধিপত্যবাদ ও সম্প্রসারণবাদ এবং তাদের দেশীয় সামাজিক, রাজনৈতিক ভিত্তির বির“দ্ধে আপোষহীন সংগ্রাম পরিচালনা, ’৭১ সালের স্বাধীনতা সংগ্রামের আদর্শ সংরক্ষণ এবং মুক্তিযোদ্ধাদের বীরের মর্যাদা।
প্রথম ঘোষণাপত্রে ১২টি কর্মসূচির কথা ঘোষণা করা হয়।
এই কর্মসূচির ক্ষেত্রগুলো ছিলো : রাষ্ট্র ও প্রশাসন ব্যবস্থা শিল্প, কৃষি, পররাষ্ট্র, দেশ রক্ষা, শ্রম, শিক্ষা আইন ও বিচার ব্যবস্থা, স্বস্থ্য ও চিকিৎসা, নারী সমাজ, যুব সমাজ ও ক্রীড়া।

কর্মসূচির মধ্যে ছিলো :
জাতীয় পর্যায় থেকে স্থানীয় সংস্থা পর্যন্ত-নির্বাচিত প্রশাসন ব্যবস্থা, রাষ্ট্রপতিকে সর্বোচ্চ নির্বাহী কর্মকর্তা হিসেবে গণ্য করে রাষ্ট্রপতি ও সংসদের ক্ষতার মধ্যে উপযুক্ত ভারসাম্য সৃষ্টি করা, জাতীয় পুঁজি বিকাশের পথ উন্মুক্ত করা, সরকার সূচিত ভূমি সংস্কারকে প্রসারিত ও পুরোপুরি বাস্তয়বান করা, সীমান্ত - নদী পানি প্রত্যাহারের ন্যয়সঙ্গত হিস্যা, দক্ষিণ তালপট্টির উপর বাংলাদেশের স্বর্বভৌমত্ব প্রতিষ্ঠা করা, দহগ্রাম-আঙ্গরপোতা ছিটমহল, তিন বিঘা করিডোর, কাঁটাতারের বেড়া ও পর্যবেক্ষণ টাওয়ারসহ ভারতের সাথে বিদ্যমান বিরোধের সম্মানজনক সমাধান করা, মুসলিম দেশসমূহের সাথে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক সংহত করা, জাতিগঠন ও উন্নয়নমূলক কর্মকান্ড সশস্ত্রবাহিনীসমূহকে সম্পৃক্ত করা, অবাধ ট্রেড ইউনিয়ন নিশ্চিত করা ও নির্বাচনের মাধ্যমে দরকষাকষি এজেন্ট নির্ধারণ করা, বিচার বিভাগকে প্রশাসন থেকে সম্পূর্ণ আলাদা করা।

Leave a review: